রহমত নিউজ 18 October, 2023 07:59 PM
আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ আংশিক কর্মসূচি ঘোষণা করছি। ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করব। এই মহাসমাবেশ থেকে আমাদের মহাযাত্রা শুরু হবে। ২৮ তারিখের মহাসমাবেশের পর আমরা আর থামব না। টানা কর্মসূচি চলবে। অনেক বাধা বিপত্তি আসবে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে অশান্তির এ সরকারের পতন ঘটাব আমরা।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুগপৎ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক-দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, হাবিবুর রহমান হাবিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
দুর্গাপূজার ছুটির মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করবে নাকি জনগণের আন্দোলনে বিতাড়িত হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সামনে কয়েকটা দিন সময় আছে, এরমধ্যে পূজার ছুটি। তারমধ্যে সিদ্ধান্ত নিন আপনারা (সরকার) কী করবেন। পদত্যাগ করে সসম্মানে নিরাপদ প্রস্থান করবেন, নাকি জনগণ দ্বারা বিতাড়িত হবেন। এটা খুব প্রয়োজনীয় কথা, আমরা তাদেরকে (সরকারকে) আবারও আহ্বান জানাই জনগণের ভাষা বুঝতে পেরে পদত্যাগ করুন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। শান্তিপূর্ণ জনগণের প্রতিনিধি হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার গত কয়েক মাসে বিএনপির ৯৬ জন নেতাকে বিভিন্ন মামলায় সাজা দিয়েছে, সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে, আমাদের (বিএনপির) যারা নির্বাচন করতে পারেন, তাদেরকে সাজা দিয়ে নির্বাচনের অযোগ্য করতে পারলে নির্বাচনের মাঠ ফাঁকা হয়ে যাবে। এরা ক্ষমতায় থাকলে শুধু রাজনীতি নয়, দেশ রসাতলে যাবে। বিএনপির আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, আমরা তো ক্ষমতায় যেতে চাচ্ছি না। আমরা জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করছি।
তিনি আরো বলেন, আজকে সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আজকেও দেখলাম প্রথম আলোর ভুয়া পেজ খুলে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সেখানে বলা হয়েছে আজকের বিএনপির সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। আসলে জনগণ যখন জানিয়ে দিচ্ছে যে তাদেরকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না, তখন তারা বিভিন্ন রকমের অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। আজকের এই লাখও জনতার প্রমাণ করে তাদের এই প্রোপাগান্ডা জনগণ বিশ্বাস করে না। সরকার জনগণের ভয়ে কাঁপতে শুরু করেছে, যতই তাদের ক্ষমতা শেষ হওয়ার দিন শেষ হয়ে আসছে ততই তারা এসব অপকৌশল নিচ্ছে।
বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, কিন্তু আমরা খুব বেশি আশ্চর্য হইনি। কারণ যখনি আমাদের বড় সমাবেশ থাকে তখনি এই ধরনের গ্রেপ্তার করে। এখন পর্যন্ত যতটুকু খবর পেয়েছি সমাবেশকে পণ্ড করার জন্য ২৫০ জনেরও বেশি গ্রেপ্তার করেছে। এ থেকে প্রমাণ হয় সরকার অত্যন্ত ভয় পেয়েছে। এদের পায়ে কোনো মাটি নেই। ভয় থেকেই সরকার এগুলো করছে। আমি আবারও বলছি এই সরকার সম্পূর্ণ অবৈধ সরকার। এরা বলছে সংবিধানের বাইরে যাবে না। এরা সংবিধান কাটাছেঁড়া করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। কথায় কথায় সংবিধানের দোহাই দেয়। সংবিধানের কথা বলে সারাদেশকে সহিংস রাজনীতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে গতকালও দেখতে গিয়েছিলেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ডাক্তাররা বলেছেন তাকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে বিদেশে সুচিকিৎসার কোনো বিকল্প নেই। তাদের যতটুকু চিকিৎসা দেওয়ার তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই অবৈধ সরকার তাকে ন্যূনতম চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না। এ সরকার কতটা ভয়াবহ, নিষ্ঠুর। এই সরকারের কোনো ভিত্তি নেই। এখনও বলছি মানে মানে ক্ষমতা ছাড়ুন। আজকে মানুষ জেগে উঠেছে। এই জাগ্রত জনতা ফুঁসে ওঠার আগে জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।